ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় ৩ স্কুলে ভেঙে দিল জাপা এমপির ‘নামফলক’

অভিযোগ আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে

চকরিয়া প্রতিনিধি ::

চকরিয়ার ঢেমুশিয়া, কাকারা, হারবাং ও চিরিঙ্গা ইউনিয়নে তিনতলা বিশিষ্ট ৩টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ কাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের জন্য জাপা’র এমপি হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছের নামে স্থাপিত ‘নামফলক’ ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িত বলে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোররাত ও আগেরদিন বুধবার পৃথকস্থানে এসব নামফলক ভেঙ্গে দেয়া ও নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পৃথক পৃথক অভিযোগ করেছে থানায়। জাতীয় পার্টির (এরশাদ) চকরিয়া–পেকুয়া আসনের সাংসদ হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াছ অভিযোগ করে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ঢেমুশিয়া থেকে নামফলক নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি রুস্তম আলী ও তাঁর সহযোগী যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন জড়িত রয়েছে। একইভাবে উপজেলার হারবাং, কাকারা ও চিরিঙ্গা ইউনিয়নে বুধবার দিবাগত রাতের আঁধারে তিনটি বিদ্যালয়ে স্থাপন করা নামফলক ভেঙ্গে দেয়া হয়। এসব ঘটনায়ও আওয়ামী লীগের নেতারা জড়িত।’

এর আগে বুধবার রাতে চকরিয়ায় জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে ঢেমুশিয়া থেকে নামফলক নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। এসময় এমপি ইলিয়াছ বলেন, ‘বিদেশী একটি সংস্থার অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) চলতি অর্থবছরে চকরিয়ায় তিনতলা বিশিষ্ট ১০টি ও পেকুয়ায় ৭টি স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করবে। এসব ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করার জন্য উক্ত বিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামফলক স্থাপন করা হয়। গত বুধবার সকাল থেকে তিনি কয়েকটি ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, এদিন সকাল ১১টায় ঢেমুশিয়ার জামাল উদ্দিন চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিতব্য স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করতে যান। এসময় সেখানে উপস্থিত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক আমান উলহ্মাহ জানান– এমপির নামফলকটি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রুস্তম আলীর নেতৃত্বে কয়েকজন এসে নিয়ে গেছেন। এরপর ভবন নির্মাণ কাজ উদ্বোধন না করেই ফিরে যান এমপি ইলিয়াছ। এবিষয়ে এমপি ইলিয়াছ আরো বলেন, ‘ঢেমুশিয়ার নামফলক নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক থানার ওসিকে জানালে বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ অরুণ চাকমার নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা রুস্তম আলীর হেফাজত থেকে নামফলকটি উদ্ধার করে।’

অবশ্য নামফলক নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তি দেন আওয়ামীলীগ নেতা রুস্তম আলী। তিনি বলেন, ‘ এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আমি যথেষ্ট কষ্ট করেছি। বর্তমান সরকারের আমলে এ বিদ্যালয় তিনতলা বিশিষ্ট একটি ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টার পাচ্ছে, এতে গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে আমাদের সরকারের আমলে জাপা এমপির নামে বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে। তাই বিষয়টি দলের কর্মীরা মেনে নিতে না পারায় ক্ষোভের বহি:প্রকাশের অংশ হিসেবে নামফলকটি নিয়ে যায়। পরে অবশ্য ফেরত দিয়েছে।’

এব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘এমপি মহোদয়ের কাছ থেকে প্রথমবার ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়ে নামফলকটি উদ্ধার করি। অন্য তিন বিদ্যালয়ের ঘটনায় কারা জড়িত, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।’

পাঠকের মতামত: